আমার নেটওয়ার্কিং শেখা-
Basic Networking (বেসিক নেটওয়ার্কিং) পার্ট-১
প্রারম্ভিক কথা: নেটওয়ার্কিং শেখার আগে মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন এই পৃথিবীতে নেটওয়ার্ক বলে কিছু আছে। আমরা আস্তে আস্তে, ধীরে ধীরে নেটওয়ার্কিং এর Basic Concept নেটওয়ার্ক ফান্ডামেন্ডাল শিখব। এই বেসিক নেটওয়ার্কিং বা Network Fundamental যার যত মজবুত হবে সে তত ভাল নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার হবে। আমি কিন্তু ছাত্র।
আমাদের অনেকেরই নেটওয়ার্ক সম্পর্কে টুক টাক ধারণা আছে। ভাল ভাবে নেটওয়ার্ক শেখার জন্য আগের ধারণা গুলোকে ভুলে যাই। যাতে আমাদের নেটওয়ার্কিং শেখা সহজ হয়।
গতানুগতিক ভাবে নেটওয়ার্ক কি, নেটওয়ার্ক ডিজাইন কি, বিভিন্ন ধরণের নেটওয়ার্ক, আইপি, ম্যাক, নেটওয়ার্ক ডিভাইস ইত্যাদি সম্পর্কে সবকিছু ভুলে যাই। মনে করি পৃথিবীতে নেটওয়ার্ক বলে কিছু নেই।
যাহোক আমরা কিছুটা গল্পে গল্পে নেটওয়ার্ক শিখব।
মনে করুন আপনারা দুই বন্ধু। একই অফিসে চাকুরী করেন। অফিস একটা ফাইল নিয়ে দু’জনকেই কাজ করতে হয়। ধরুন ফাইলটি MS Excel. কিছু কাজ আপনি করেন আর কিছুটা আপনার বন্ধু। কখনও আপনি কম্পিউটারে বসেন কখনও বা আপনার বন্ধু।
এতে কিছুটা ঝামেলা তৈরি হচ্ছে। একবার আপনি কম্পিউটারে বসছেন আরেকবার আপনার বন্ধু। কিছু দু’জনেরই আলাদা কম্পিউটার আছে। কিন্তু ফাইলটা তো যে কোন একজনের কম্পিউটারে আছে!!!!
যদি এমত হতো, এমন কোন ব্যবস্থা থাকত Excel ফাইলটা যার কম্পিউটারে থাকুক কিন্তু তা দু’জনের কম্পিউটার হতে কাজ করা যেত? তবে নিশ্চয়ই অনেক ভালো হতো।
আপনারা দুই বন্ধু মিলে চিন্তা ভাবনা করে বের করলেন যে, যদি আমরা একটি কেবল দিয়ে কম্পিউটার দুটোকে Communicate বা যোগাযোগ করাতে পারি তাহলে আমরা এক্সেল ফাইলটি নিয়ে নিজ নিজ কম্পিউটার হতে কাজ করতে পারি।
যেই কথা সেই কাজ। দুই কম্পিউটারের মধ্যে একটা ক্যাবল দিয়ে যোগাযোগ করিয়ে দিলেন। তারপর স্বাচ্ছন্দ্যে Excel ফাইল নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। এভাবে আপনারা প্রিন্টার শেয়ার করলেন, ফাইল আদান প্রদান করলেন, ছবি, ভিডিও পাঠালেন, আরও কত কিছু করলেন তার ইয়াত্তা নেই।
এখানে কম্পিউটার দুটিকে বলা হবে Host আর ক্যাবলটাকে বলা হবে Media. প্রিন্টার হলো Resource, ফাইল, ছবি, ভিডিও, অডিও ইত্যাদি হল Data. তাহলে আমাদের নেটওয়ার্কের সংজ্ঞা কি হবে?
নেটওয়ার্ক (Network) কি?
যখন একাধিক কম্পিউটার কোন মিডিয়া দ্বারা আবদ্ধ থাকে এবং উভয়ের মধ্যে Data আদানপ্রদান ও Resource শেয়ার করতে পারে তখন তাকে নেটওয়ার্ক (Network) বলে। এটা নেটওয়ার্কের খুব ছোট একটি সংজ্ঞা।
এভাবে প্রয়োজনের তাগিদে দুটি কম্পিউটার থেকে কয়েকটি কম্পিউটার, তারপর কয়েকগুচ্ছ কম্পিউটার, তারপর একটি অফিস থেকে অন্য একটি অফিস, তারপর একটি এলাকা থেকে অন্য একটি এলাকা, তারপর এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রাম, তারপর ইউনিয়ন, থানা, জেলা, দেশ তারপর World Wide নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে পড়ে। আর এভাবেই আজকের ইন্টারনেট (Internet)।
দুটি কম্পিউটারের মধ্যে নেটওয়ার্ক তৈরি করতে হলে কমপক্ষে কম্পিউটারের দুটিতে Network Interface Controller (সংক্ষেপে NIC কার্ড- যা কম্পিউটারের মাদারবোর্ড এ Built in ভাবে থাকে অথবা আলাদা করে লাগানো যায়) ও এক ধরনের বিশেষ ক্যাবল লাগবে যাকে বলে নেটওয়ার্ক ক্যাবল (Cat-5, Cat-6) এবং NIC কার্ড এর সাথে সংযোগের জন্য RJ-45 Connector দরকার পড়বে। RJ অর্থ Register Jack এবং 45 হলো একটি মডেল নম্বর।
আর Cat-5 ও Cat-6 হলো ক্যাবলের ক্যাটাগরি। Cat-6 এ নেটওয়ার্ক ক্যবলগুলি উপরে একটি Safety Wire থাকে যেটা Cat-5 এ থাকেনা। আরও কিছু বাড়তি বিশেষত্ব থাকতে পারে। নিচের চিত্র থেকে দেখে নেই।
নেটওয়ার্ক তৈরির জন্য Cable কীভাবে সংযোগ করবেন, Data কীভাবে Transfer হবে, এর জন্য কি ধরণের কেবল দরকার পড়বে, কম্পিউটার ডেটা কিভাবে গ্রহণ করবে, কিভাবে প্রেরণ করবে ইত্যাদি বিষয়গুলিও জানতে হবে এবং Configure করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যারও দরকার পড়ে।
কিভাবে নেটওয়ার্ক কেবল তৈরি করবেন এবং এর জন্য কি কি টুলস দরকার হয় তা আপনার আশে পাশে থাকা ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার, নেটওয়ার্ক টেকনিশিয়ান অথবা একজন ইঞ্জিনিয়ার থেকে প্রাকটিক্যালি দেখে নেবেন। সাধারণত ক্যাবলিং করার জন্য নেটওয়ার্ক ক্যবল, আরজে-৪৫ কানেকটর, ক্রিম্পার বা পাংশ্চ মেশিন দরকার পড়ে।
আসলে দুটি কম্পিউটারের মধ্যে ক্যাবল টেনে দিলেই নেটওয়ার্ক তৈরি হয় না। এতে কেবল মাত্র Physical Connectivity স্ট্যাবলিস্ট হয়। কিন্তু ডেটা আদান প্রদানের জন্য কিছু নিয়ম-নীতি আছে। কেননা ধরুন, একই সময়ে আপনি ও আপনার বন্ধু দু’জনেই দুই ফাইল একে অন্যকে পাঠালেন।
কি হলো?
দুইটি ফাইল দুই কম্পিউটার থেকে এসে ক্যাবলের মধ্যে ধাক্কা লেগে গেল। লাগল জ্যাম। জ্যাম ছোটানোর জন্য এখন ট্রাফিক পুলিশ দরকার হবে নাকি? আরে না। এখানে ট্রাফিক পুলিশের দরকার নাই। তবে এই রকম ক্যাবলের মধ্যে জ্যাম ট্যাম যাতে না লাগে সেই জন্য এবং অনেক কাজের জন্যই কিছু নিয়ম-কানুন দরকার। আর এই নিয়ম-কানুন গুলোকেই বলে Network Protocol. আর এ ধরনের প্রটোকল Stablished করাকেই Logical Connectivity বলে।
আমাদের ফিজিক্যাল কানেকটিভিটি শেষ আগামী পর্বে আমরা লজিক্যাল কানেকটিভিটি তথা Network Protocol আলোচনা কর।
তো আজ এই পর্যন্তই। আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি ভাল লাগলে লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করতে ভুলবেন না।