বয়স যখন চল্লিশ!

Spread the love
Aqsa IT
সূরা:আহকাফে এসেছে- وَ بَلَغَ اَرۡبَعِیۡنَ سَنَۃً – “এবং চল্লিশ বছরে উপনীত হয়…” (৪৬:১৫)
চল্লিশ বছর বয়স পরিপক্ক হওয়ার বয়স। এটা আপনার জীবনের একেবারে মাঝখানের বয়স। এ বয়স নিয়ে আধুনিক সমাজে আমরা একটা পরিভাষা ব্যবহার করি— “মিড লাইফ ক্রাইসিস বা মধ্য বয়সের সঙ্কট”। কারণ, নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে আপনি দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছেন। তাই, তারা এটাকে একটা সঙ্কট মনে করে।
কিন্তু ইসলামের ক্ষেত্রে— এ বয়সে উপনীত হওয়ার পর আপনি উপলব্ধি করতে পারেন, আমার জীবনের অর্ধেকটা সময় ইতোমধ্যে পার হয়ে গেছে। অতীতের দিকে তাকিয়ে আমার কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত। এখন, নিজের ভবিষ্যতের দিকে না তাকিয়ে আমার ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে হবে। ঠিক এ ব্যাপারটাই আলোচ্য আয়াতে তুলে ধরা হয়েছে।
উক্ত ব্যক্তি তখন বলে- رَبِّ اَوۡزِعۡنِیۡۤ اَنۡ اَشۡکُرَ نِعۡمَتَکَ الَّتِیۡۤ اَنۡعَمۡتَ عَلَیَّ وَ عَلٰی وَالِدَیَّ – “হে আমার প্রতিপালক! আপনি আমাকে আর আমার পিতা-মাতাকে যে নেয়ামত দান করেছেন তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার শক্তি আমাকে দান করুন…”
ইয়া রব! আপনি আমার প্রতি যে কল্যাণ দান করেছেন এবং আমার পিতা-মাতার প্রতি যে কল্যাণ দান করেছেন তার জন্য আমি আপনার নিকট চরম কৃতজ্ঞ।
আমাদের বয়স যখন চল্লিশ আমাদের পিতা-মাতাদের তখন বয়োবৃদ্ধ হয়ে পড়ার কথা। আল্লাহ এখানে আমাদেরকে নিজেদের জন্য এবং পিতা-মাতার জন্য দুআ করা শিক্ষা দিচ্ছেন। আয়াতের এই অংশটুকু আমাদের জীবনের অতীত নিয়ে।
এরপর এসেছে ভবিষ্যতের কথা- وَ اَنۡ اَعۡمَلَ صَالِحًا تَرۡضٰهُ – “আর আমাকে এমন সৎকর্ম করার সামর্থ দিন যাতে আপনি সন্তুষ্ট হোন।”
এখন মৃত্যু যেহেতু খুবই কাছে, ইয়া আল্লাহ! আমাকে এমনসব সৎকাজ করার তৌফিক দান করুন যাতে আপনি সন্তুষ্ট হয়ে যান। وَ اَصۡلِحۡ لِیۡ فِیۡ ذُرِّیَّتِیۡ – “আমার সন্তানদেরকে সৎকর্মপরায়ণ করে আমার প্রতি অনুগ্রহ করুন”
আমি আমার সন্তানদের এবং তাদের পরবর্তী বংশধরদের জন্য দুআ করছি। আমার জন্য তাদেরকে সৎকর্মপরায়ণ করুন। আমি তাদের কারণে তাদের জন্য উদ্বিগ্ন নই। কারণ, আমি জানি বিচার দিবসে যখন আমি আল্লাহর সামনে দাঁড়াবো তখন আমাকে জিজ্ঞেস করা হবে— তোমার সন্তানদের কিভাবে বড় করেছো?
যদি এই কাজ আমি ঠিকভাবে সম্পাদন করতে না পারি, তখন তারাও তাদের সন্তানদের সঠিক উপায়ে বড় করবে না। এভাবে ক্রমান্বয়ে পরিস্থিতি শুধু খারাপ হবে। ক্ষতিটা শুরু হবে আমাকে দিয়ে। তাই, আমার জন্য তাদেরকে সৎকর্মপরায়ণ করে দিন। ۚؕ اِنِّیۡ تُبۡتُ اِلَیۡکَ – “আমি অনুশোচনাভরে আপনার দিকে ফিরে আসছি।” وَ اِنِّیۡ مِنَ الۡمُسۡلِمِیۡنَ – “এবং নিশ্চয় আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত।”
এর পরের আয়াতে আল্লাহ বলেন- اُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ نَتَقَبَّلُ عَنۡهُمۡ اَحۡسَنَ مَا عَمِلُوۡا وَ نَتَجَاوَزُ عَنۡ سَیِّاٰتِهِمۡ فِیۡۤ اَصۡحٰبِ الۡجَنَّۃِ ؕ وَعۡدَ الصِّدۡقِ الَّذِیۡ کَانُوۡا یُوۡعَدُوۡنَ – “এরাই, যাদের উৎকৃষ্ট আমলগুলো আমি কবুল করি এবং তাদের মন্দ কাজগুলো ক্ষমা করে দেই। তারা জান্নাতবাসীদের অন্তর্ভুক্ত। তাদেরকে যে ওয়াদা দেয়া হয়েছে, তা সত্য ওয়াদা। “
[দুয়াটা মুখস্ত করতে পারেন- رَبِّ اَوۡزِعۡنِیۡۤ اَنۡ اَشۡکُرَ نِعۡمَتَکَ الَّتِیۡۤ اَنۡعَمۡتَ عَلَیَّ وَ عَلٰی وَالِدَیَّ وَ اَنۡ اَعۡمَلَ صَالِحًا تَرۡضٰهُ وَ اَصۡلِحۡ لِیۡ فِیۡ ذُرِّیَّتِیۡ ۚؕ اِنِّیۡ تُبۡتُ اِلَیۡکَ وَ اِنِّیۡ مِنَ الۡمُسۡلِمِیۡنَ – হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমাকে আর আমার পিতা-মাতাকে যে নিয়ামাত দান করেছ তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার শক্তি আমাকে দান কর, আর আমাকে এমন সৎকর্ম করার সামর্থ দাও যাতে তুমি সন্তুষ্ট হও, আমার সন্তানদেরকে সৎকর্মপরায়ণ করে আমার প্রতি অনুগ্রহ কর, আমি অনুশোচনাভরে তোমার দিকে ফিরে আসছি, আর আমি অনুগত বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত। (৪৬:১৫) ]