তারাবী’র নামাজ (সালাতুত তারবীহ)

Spread the love

Aqsa IT

তারাবী’র নামাজ (সালাতুত তারবীহ) সম্পর্কে আজ আমরা বিস্তারিত জানব- ইনশাআল্লাহ।

تراويح এর সংজ্ঞা: 

تراويح শব্দটি ترويحة এর বহুবচন।ترويحة অর্থ একবার বিশ্রাম গ্রহণ করা। যেমন-تسليمة অর্থ একবার সালাম দেওয়া।
ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (র:) বলেন-
التراويح جمع ترويحة وهى المرة الواحدة من الراحة كتسليمة من السلام‘(فتح البارى).
পরিভাষায় মাহে রমজানের বরকতময় রজনীতে জামাতের সংগে যে সালাত আদায় করা হয় তাকে صلاة التراويحবলে।
এ নামকরণের কারণ :এ প্রসংগে فتح البارىতে উল্লেখ রয়েছে-
سميت الصلاة فى الجماعة فى ليالى رمضان التراويح لانهم اول ما اجتمعوا عليها كانوا يستريحون بين كل تسليمتين- (فتح البارى‘كتاب صلاة التراويح)
অর্থ্যাৎ :এই নামকরণের কারণ হচ্ছে, যখন থেকে সাহাবায়েকেরাম এ সালাত সম্মিলিত ভাবে আদায় করতে আরম্ভ করেন তখন থেকেই তাঁরা প্রতি দু সালামের পর (৪ রাকায়াতের পর) বিশ্রাম নিতেন। (ফতহুল বারী)

রাসূলুল্লাহ (স:) এর আমলে تراويح এর সালাত:

এ বিষয়ে সহীহ মুসলিমে রয়েছে- হযরত আয়েশা (রা:) বলেন-
ان رسول الله صلى الله عليه وسلم فى المسجد ذات ليلة فصلى بصلاته ناس ثم صلى من القابلة فكثر الناس ثم اجتمعوا من الليلة الثالثة او الرابعة فلم يخرج اليهم رسول الله صلى الله عليه وسلم. فلما اصبح قال: قدرايت الذى صنعتم فلم يمنعنى من الخروج اليكم الا انى خشيت أن تفرض عليكم قال وذلك فى رمضان- (مسلم)

অর্থ্যাৎ- নবী (স:) রমজানের একরাতে মসজিদে তারাবী পড়লেন, সাহাবীগণ ও তাঁর সাথে সালাতেশামীল হলেন।দ্বিতীয় রাতে মুকতাদীর সংখ্যা আরো বেড়ে গেল।এর পর তৃতীয়/চতুর্থ রাতে নবী (স:) আর মসজিদে আসলেন না। সকালে সকলকে লক্ষ্য করে বললেন, আমি তোমাদের আগ্রহ ও উপস্থিতি লক্ষ করেছি,কিন্তু এসালাত তোমাদের উপর ফরয হয়ে যাবে এ আশংকায় আমি তোমাদের কাছে আসিনি। (সহীহ মুসলিম হাদিস নং-৭৬১/১৭৭।)

Aqsa IT

তারাবীহ সালাতের প্রতি রাসূল (স:) এর উৎসাহ ও গুনাহ মাফির ঘোষনা:

সহীহ মুসলিমে এসেছে-হযরত আবু হুরায়রা (রা:) বলেন-
كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يرغب فى قيام رمضان من غير ان يأمرهم فيه بعزيمة فيقول: من قام رمضان إيما نا وإحتسابا غفر له ما تقدم من ذنبه فتو فى رسول الله صلى الله عليه وسلم والامر على ذلك ثم كان الامر على ذالك فى خلافة أبى بكر وصدرا من خلافة عمر على ذلك- (مسلم)
অর্থ্যাৎ :নবী (স:) কিয়ামে রমযানের প্রতি উৎসাহিত করতেন, তবে তিনি তা অপরিহার্য করেন নি। তিনি বলতেন, যে ব্যক্তি রমযানের রাতে সাওয়াবের আশায় দন্ডায়মান হয় তার পূর্ববর্তী গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। নবী (স:) এর যুগ, আবু বকর (র:) এর যুগ এবং হযরত উমর ফারুক (র:) এর খেলাফত কালের প্রথম দিকে এই অবস্থাই বিদ্যমান ছিল। (সহীহ মুসলিম- ৭৫৯/১৮৪)

উমর (রা:) এর শেষ আমলে তারাবীহর জামায়াত চালু :

বর্তমান নিয়মে জামায়াতের সাথে তারাবীহ চালু করলেন হযরত উমর (রা:); যার বিরোধীতা উপস্থিত কোন সাহাবী, তাবেয়ী করেন নি। তাবেয়ী হযরত আবদুর রহমান আল কারী (র:) বলেন-
خرجت مع عمر بن الخطاب رضى الله عنه فى رمضان إلى المسجد‘ فاذا الناس أو زاع متفرقون يصلى الرجل لنفسه‘ ويصلى الرجل فيصلى بصلاته الرهط فقال عمر : والله إنى لأرانى لو جمعت هؤلاء على قارى واحد لكان امثل‘ فجمعهم على ابى بن كعب‘ قال ثم خرجت معه ليلة اخرى والناس يصلون بصلاة قارئهم. فقال عمر نعمت البدعة هذه- والتى تنامون عنها افضل من التى تقومون. يعنى اخر الليل وكان الناس يقومون اوله- موطأ مالك‘ ماجاء فى قيام رمضان.

অর্থ্যাৎ :আমি রমজান মাসে উমর (রা:) এর সাথে মসজিদে গেলাম। দেখলাম লোকেরা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে তারাবী পড়ছেন। কেউ একা পড়ছেন, আবার কেউ দু’চারজন সঙ্গে নিয়ে পড়ছেন। তখন উমর (রা:) বললেন, এদের সকলকে যদি এক ইমামের পিছনে জামাতবদ্ধ করে দিই তাহলে মনে হচ্ছে উত্তম হয়। এরপর তিনি তাদেরকে উবাই ইবনে কাব (রা:) এর পেছনে জামাতবদ্ধ করে দিলেন। (মুয়াত্তা ইমাম মালেক; নবীজীর (স:) নামায-২৬০ পৃ:)।

খেলাফতের দ্বিতীয় বৎসর ১৪ হিজরীতে এ ঘটনা ঘটে। তিনি আরো বলেন, তারপর আরেক রাত্রিতে আমি উমর (রা:) এর সাথে বের হলাম, দেখতে পেলাম। লোকেরা একজন ক্বারীর পিছনে জামায়াতবদ্ধ হয়ে সালাত আদায় করছে। এ দৃশ্য দেখে উমর (রা:) বলে উঠলেন, এই বিদয়াতটি কতই না উত্তম। তবে রাতের যে অংশে তোমরা নামাযে দন্ডায়মান হও, তা থেকে ঐ অংশ উত্তম যে, অংশে তোমরা ঘুমিয়ে থাক। বর্ণনাকারী বলেন, তখন প্রথম রাতেই তারাবী নামায পড়া হতো।

তারাবীহ সালাতের রাকায়াত সংখ্যা :

তারাবীহ সালাতের রাকায়াত সংখ্যা নিয়ে যেসব হাদিস পাওয়া যায় তার সারকথা হলো, এ বিষয়ে রাসূল (স:) কোন সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন বলে কোন সহীহ সূত্রে প্রমাণ পাওয়া যায় না।
সূত্র অনুযায়ী যে বিষয়ে রাসূল (স:) থেকে সহীহ সূত্র পাওয়া না যায়, সে বিষয়ে আমাদেরকে দেখতে হবে, এ বিষয়ে সাহাবায়েকিরামের মতামত ও আমল কি ছিল।

এ বিষয়ে সাহাবাদের মধ্যে কোন মতভেদ নেই যে, হযরত উমর (রা:) এর আমলেই তারাবীর জামাত কায়েম হয়েছে এবং সকল সাহাবায়ে কেরাম ২০ রাকায়াত তারাবী আদায় করেছেন। এ বিষয়ে কারো কোন দ্বিমত নেই বিধায় উক্ত ২০ রাকায়াতের উপরই ইজমা সংঘটিত হয়েছে। অতএব সাহাবায়ে কেরামের যুগ থেকে আজ পর্যন্ত মক্কা ও মদীনা মুনাওয়ারায় ও ২০ রাকায়াত তারাবী চালু থাকাই প্রমাণ করে যে, তারাবী ২০ রাকায়াতই সুন্নাত। এ বিষয়ে হানাফী, শাফেয়ী, মালেকী ও হাম্বলী মাযহাবের সকল ইমামই ঐক্যমত পোষণ করেছেন। এ বিষয়ে ওলামায়েকেরামের বক্তব্য নিম্নে তুলে ধরা হলো-

ইমাম ইবনে তাইমিয়ার অভিমত : হাম্বলী মাযহাবের অনুসারী ইমাম ইবনে তাইমিয়া (র:) বলেন-
ومن ظن ان قيام رمضان فيه عدد موقت عن النبى صلى الله عليه وسلم لا يزاد فيه ولا ينقص منه فقد أخطأ- )فتوى ابن تيمية(
অর্থ্যাৎ : যে মনে করে নবী (স:) তারাবী নামাযের রাকায়াত সংখ্যা নির্ধারণ করেছেন; যা থেকে হ্রাস বৃদ্ধি করা যাবে না, তার ধারণা ভুল। (ফতোয়ায়ে ইবনে তাইমিয়া ২য় খন্ড ৪০১ পৃ: নবীজীর নামায, পৃ: ২৫৮)

আল্লামা শাওকানীর অভিমত :আল্লামা শাওকানী (র:) বলেন,
والحاصل ان الذى دلت عليه احاديث الباب وما يشابهها مشرو عية القيام فى رمضان‘ والصلاة فيه جماعة وفرا داى فقصد الصلاة المسماة باالتراويح على عدد معين وتخصيصها بقرأة مخصوصة لم يردبه سنة- (نيل الاوطار)
অর্থ্যাৎ- সারকথা এই যে, তারাবী বিষয়ের সকল বর্ণনা সামনে রাখলে তারাবী সালাত এবং তা একা বা জামাতে আদায় করার প্রমান পাওয়া যায়, কিন্তু এ সালাতের সুনির্দিষ্ট রাকায়াত সংখ্যা বা বিশেষ কিরায়াত নবী (স:) থেকে বর্ণিত নয়। (নায়লুল আওতার-৩য় খন্ড, ৬৪ পৃ:)

উমার (রা:) এর যুগে ২০ রাকায়াত চালু :

ইমাম বায়হাকী (র:) কিতাবুল মা’রিফায় সাঈব ইবনে ইয়াযীদ (র:) থেকে বর্ণনা করেন-
كنا نقوم فى زمن عمر بن الخطاب بعشرين ركعة والوتر- (نصب الراية ‘اسناده صحيح)
অর্থ্যাৎ :আমরা উমর (রা:) এর আমলে ২০ রাকায়াত তারাবী ও বিতর পড়তাম।
উক্ত হাদিসকে যাঁরা সহীহ বলেছেন:
১) ইমাম নববী (র:) ২) বদরুদ্দীন আইনি (র:) ৩) জালাল উদ্দীন সূয়তী (র:) ৪) আল্লামা নিমাভী(র:) সহ অসংখ্য মুহাদ্দিস।
ইমাম ইবনে তাইমিয়া (র:) বলেন-
فلما جمعهم عمر على ابن بن كعب كان يصلى بهم عشرين ركعة ثم يوتربثلاث (الفتواى المصرية)
অর্থ্যাৎ :যখন উমর (রা:) লোকদেরকে উবাই ইবনে কাব (রা:) এর পিছনে একত্র করে দিলেন. তখন তিনি বিশ রাকায়াত তারাবী ও ৩ রাকায়াত বিতর পড়তেন।
ইমাম আব্দুল বার (র:) এর অভিমত : তিনি বলেন,
وهو الصحيح عن ابى بن كعب من غيرخلاف من الصحابة- (الاستذكار)
অর্থ্যাৎ ২০ রাকায়াত তারাবীহ হযরত উবাই ইবনে কাব (র:) থেকে বিশুদ্ধ রুপে প্রমাণিত। সাহাবীগণের এ ক্ষেত্রে কোন দ্বিমত ছিল না।
ইমাম ইবনে কুদামা (র:) এর অভিমত :
ইবনে কুদামা (র:) তাঁর আল মুগনী গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন-
ما فعله عمر وأ جمع عليه الصحابة فى عصره أولى بالاتباع- )المغنى(
অর্থ্যাৎ উমর (রা:) যা করেছেন এবং তাঁর আমলে সাহাবীগণ যে বিষয়ে একমত হয়েছেন সেটাই অনুসরণের অধিক উপযুক্ত।

হযরত ওসমান (রা:) এর আমলেও ২০ রাকায়াত তারাবী :

তাবেয়ী সাইব ইবনে ইয়াযীদ (র:) বলেন-
كانوا يقومون على عهد عمر بن الخطاب فى شهر رمضان بعشرين ركعة وكانوا يقرؤن بالمئين- وكانوا يتوكؤون على عصيهم فى عهد عثمان من شدة القيام- )بيهقى‘ اثار السنن- رجاله ثقات(
অর্থ্যাৎ :উমর (রা:) এর যুগে সাহাবায়েকেরাম তারাবীর সালাত ২০ রাকায়াত পড়তেন এবং শতাধিক আয়াত বিশিষ্ট সূরা সমূহ পড়তেন। উসমান (রা:) এর সময়ে দীর্ঘ সময় দন্ডায়মান থাকার কারণে তারা লাঠিতে ভর দিতেন। (বায়হাকী, ২য় খন্ড-৪৯৬ পৃ:)

হযরত আলী (রা:) এর খিলাফতকালেও ২০ রাকায়াত পড়ার দলীল:

আবু আব্দু রহমান আস সুলামী (র:) বলেন
دعا على رضى القرأ فى رمضان فا مر منهم رجلا يصلى باالناس عشرين ركعة قال وكان على يو تره بهم (بيهقى)
অর্থ্যাৎ :আলী (রা:) রমযান মাসে ক্বারীদেরকে ডাকলেন এবং আদেশ দিলেন, তারা যেন লোকদের নিয়ে বিশ রাকায়াত তারাবী পড়েন। আর বিতর পড়াতেন স্বয়ং আলী (রা:)। (বায়হাকী)

ইমাম তিরমিযি (র:) এর অভিমত : তিনি বলেন,
واكثر اهل العلم على ما روى عن على رضى وعمر رضى وغيرهما من اصحاب النبى صلى الله عليه وسلم عشرين ركعة- (ترمذى باب ماجاء فى قيام شهر رمضان)
অর্থ্যাৎ : অধিকাংশ মনীষী ওই মতই পোষণ করেছেন যা আলী (রা:), উমর (রা:) এবং অন্যান্য সাহাবা থেকে বর্ণিত হয়েছে।
অর্থ্যাৎ ২০ রাকায়াত।

ইমাম তিরমিযির অপরমতে ৪১ রাকায়াত উল্লেখ করেছেন,কিন্তু কোথাও ৮ রাকায়াত উল্লেখ করেন নি।

ইমাম নববী (র:) এর অভিমত :ইমাম নববী (র:) বলেন-
اعلم ان صلاة التراويح سنة باتفاق العلماء وهى عشرون ركعة يسلم من كل ركعتين (الاذكار)-
অর্থ্যাৎ :তারাবীর সালাত সুন্নাত হওয়ার ক্ষেত্রে সকল আলিম একমত। এ নামায বিশ রাকায়াত, যার প্রতি দু’রাকায়াতে সালাম ফিরাতে হয়।

হারাম শরীফের আমল : এ বিষয়ে ইমাম শাফেয়ী (র:) বলেন,
واحب الى عشرون لانه روى عن عمر رضى الله عنه- وكذالك يقومون بمكة ويوترون بثلاث )الام(
অর্থ্যাৎ :তারাবী ২০ রাকায়াত পড়া আমার নিকট এজন্যই পছন্দনীয় যে, উমর (রা:) থেকে এরূপ বর্ণিত আছে। মক্কাবাসী ও তারাবীর নামায এভাবে আদায় করেন। আর তারা বিতর নামায তিন রাকায়াত পড়ে থাকেন।
মদীনা মুনাওয়ারায় নিরবিচ্ছিন্ন ২০ রাকায়াতের আমল: সৌদি আরবের প্রসিদ্ধ আলিম, মদীনা শরীফের কাযী শেখ আতিয়্যা সালিম লিখেন-
وفى نهاية هذا العرض التاريخى نستو قف القارئ الكر يم نتسأل معه هل وجد التراويح عبر التاريح الطويل اكثر من الف عام فى مسجد النبى عليه السلام منذ نشأتها إلى اليوم قد اقتصرت على ثمان ركعات اوقلت عن العشرين ركعة ام أنها اربعة عشر قرنا وهى على هذا الحال ما بين العشرين والاربعين- (التراويح)
অর্থ্যাৎ উপরের এই দীর্ঘ আলোচনা ও পর্যলোচনার পর পাঠকের খেদমতে আমাদের প্রথম প্রশ্ন এই যে, এই সুদীর্ঘ এক হাজার বছরের ও বেশী সময়ে কখনো কি মসজিদে নববীতে তারাবীর নামায আট রাকায়াত পড়া হয়েছে ?কিংবা বিশ রাকায়াতের কম পড়া হয়েছে ? হয়নি। বরং ইতিহাস এ কথাই প্রমাণ করে যে, পুরো চৌদ্দশ বছর তারাবী নামায বিশ রাকায়াত বা তারও বেশী পড়া হয়েছে। (তারাবীহ পৃষ্ঠা নং- ১০৮, নবীজীর নামায-২৭২ পৃষ্ঠা)

ইমাম আবু হানীফা (র:) এর মতামত :
ইমাম আবু হানীফা (র:) এর ছাত্র ইমাম আবু ইউসুফ (র:) একবার এ বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করলে- আবু হানীফা (র:) উত্তরে বলেন-
التراويح سنة مؤكدة ولم يتخر صه عمر من تلقاء نفسه‘ ولم يكن فيه مبتدعا ولم يأمربه الا عن اصل لديه وعهد من رسول الله صلى الله عليه وسلم ولقد سن عمر هذا وجمع الناس على ابى بن كعب فصلاها جماعة والصحابة متوافرون منهم عثمان‘ وعلى‘ وابن مسعود‘والعباس‘ وابنه وطلحة‘ والزبير‘ ومعاذ‘ وابى وغيرهم من المهاجرين والانصار رضى الله عنهم اجمعين- وما رد عليه واحد منهم بل ساعدوه وافقوه وامرو بذالك (الاختبار تعليل المختار)

অর্থ্যাৎ :তারাবীহ সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ এবং উমর (রা:) তা নিজের থেকে অনুমান করে নির্ধারন করেন নি। তিনি এ ব্যাপারে নতুন করে কিছু আবিষ্কার ও করেন নি। তিনি দলীলের ভিত্তিতেই এই আদেশ দান করেছেন। তাছাড়া যখন উমর (রা:) এ নিয়ম চালু করেন এবং উবাই ইবনে কাব (রা:) এর ইমামতিতে সকল মানুষকে একত্রিত করেন। যদ্দরুন সবাই এই নামাযটি জামায়াতের সাথে আদায় করতে থাকেন তখন সাহাবায়ে কেরামের সংখ্যা ও ছিল প্রচুর। যাদের মধ্যে উসমান, আলী, ইবনে মাসউদ আব্বাস, ইবনে আব্বাস, তালহা, যুবায়ের, মুআজ, ও ওবাই, রাদিয়াল্লাহু আনহুম প্রমুখ বড় বড় মুহাজির ও আনসার সাহাবী বিদ্যমান ছিলেন। তাঁদের কেউই এ বিষয়টিকে প্রত্যাখ্যান করেন নি বরং সবাই তাকে সমর্থন করেছেন এবং তাঁর সাথে একমত হয়েছেন এবং অন্যদের কে এই আদেশই দিয়েছেন।
আল ইখতিয়ার লি-তালীলিল মুখতার।
ইমাম আবুল ফযল মাজদুদ্দীন আল মাওসিলী ১ম খন্ড ৭০ পৃ: নবীজীর (স:) নামায- ৪১৭ পৃ:

তারাবী ও তাহাজ্জুদ :

তারাবী ও তাহাজ্জুদ দু’টি আলাদা সালাতের নাম। তারাবী শুধু রমযানে আদায় করা হয় আর তাহাজ্জুদ রমযান ও অন্যান্য সময় ইশার পর ফযরের আগ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে আদায় করা হয়। হাদিসের পরিভাষায় তারাবীকে (কিয়ামে রমাদান) আর তাহাজ্জুদকে কিয়ামুল্লাইল বলা হয়েছে। রমযানে তারাবী সুন্নাতে মুয়াক্কাদা, আর তাহাজ্জুদ সুন্নাতে যায়েদা। তাহাজ্জুদ সালেহীনদের আমল বলে হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে।

তারাবী রাসূল (স:) কত রাকায়াত পড়েছেন এ মর্মে সুষ্পষ্ট বর্ণনা নিয়ে মতভেদ আছে। তবে ২০ রাকায়াতের উপর সাহাবাদের ইজমার কথা সহীহ সনদে বর্ণিত আছে। আর তাহাজ্জুদ রাসূল (স:) কখনো ৮ রাকায়াত পড়েছেন, কখনো ১০ রাকায়াত পড়েছেন আবার কখনো এর চেয়েও বেশী পড়েছেন বলে সহীহ সনদের বিভিন্ন হাদিসে পাওয়া যায়। যেমন বুখারী শরীফে এসেছে-

عن مسروق قال سألت عائشة رضى الله عنها عن صلاة رسول الله صلى الله عليه وسلم با لليل‘ فقالت: سبع وتسع وإحدى عشرة سوى ركعة الفجر- (بخارى كتاب التهجد رقم ১১৩৯)

অন্য হাদিসে আয়েশা (রা:) কে রাসূল (স:) এর রাতের নামাযে তথা তাহাজ্জুদ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে আয়েশা (রা:) বলেন-
كان النبى صلى الله عليه وسلم يصلى من الليل ثلاث عشرة ركعة منها الوتر وركعة الفجر- (بخارى كتاب التهجد رقم الحديث১১৪০)

বুখারী শরীফের অধ্যায়ে রমযান মাসে রাসূল (স:) এর নামায সম্পর্কে হযরত আয়েশা (রা:) কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন-
كيف كانت صلاة رسول الله فى رمضان ؟ فقالت ما كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يزيد فى رمضان ولا فى غيره على إحدى عشرة ركعة يصلى اربعا فلاتسل عن حسنهن وطولهن ثم يصلى اربعا فلا تسل عن حسنهن وطولهن ثم يصلى ثلاثا قالت عائشة فقلت يا رسول الله اتنام قبل ان توتر ؟ فقال يا عائشة ان عينى تنامان ولا ينام قلبى- (بخارى كتاب التهجد رقم الحديث ১১৪৭.)

অর্থ্যাৎ হযরত আবু সালমা ইবনে আব্দুর রহমান (র:) একবার হযরত আয়েশা (রা:) কে জিজ্ঞেস করলেন, মাহে রমযানে (রাতে) রাসূল (স:) এর নামায কেমন ছিল ?তিনি জবাব দিলেন, রমযানে এবং রমযান ব্যতীত অন্য সময় তিনি ১১ রাকায়াতের বেশী পড়তেন না।

প্রথমত তিনি চার রাকায়াত পড়েন। এ চার রাকায়াতের সৌন্দর্যও দীর্ঘতা সম্বন্ধে তুমি কোন প্রশ্ন করো না, তারপর আরও চার রাকায়াত পড়েন। এর সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্বন্ধে জিজ্ঞোসাই করো না। এরপর পড়েন আরও তিন রাকায়াত, তখন আমি জিজ্ঞেস করলাম হে আল্লাহর রাসূল (স:)! আপনি বিতির নামায পড়ার আগেই শুয়ে যান ?তিনি বললেন, হে আয়েশা (র:) আমার চোখ দুটি ঘুমিয়ে যায় কিন্তু অন্তর ঘুমায় না। (বুখারী কিতাবুত তাহাজ্জুদ ১১৪৭নং হাদিস)।

উক্ত হাদিসটি মুসলিম শরীফে রাসূল (স:) এর রাতের নামায ও তার রাকায়াত সংখ্যা অধ্যায়ে ও উল্লেখ করা হয়েছে- হাদিস নং- ৭৩৮ [১২৫]
তিরমিযি শরীফে উক্ত হাদিসটি-
باب ماجاء فى وصف صلاة النبى صلى الله عليه وسلم بالليل.
অধ্যায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। হাদিস নং-৪৩৯

যারা তারাবী নামায ৮ রাকায়াত সুন্নাত বলেন এবং এর অধিক পড়াকে বিদয়াত বলেন, তাঁরা উক্ত হাদিসকে তাঁদের মতের পক্ষের দলীল হিসেবে উল্লেখ করেন,

উক্ত হাদিসটি গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করলে যা অনুধাবন করা যায়- তাহলো-
১) উক্ত হাদিস দ্বারা যদি ৮ রাকায়াত তারাবী প্রমাণ করা হযরত আয়েশা (রা:) এর উদ্দেশ্য হতো এবং তারাবী এর অধিক পড়া সুন্নহ বিরোধী হতো তাহলে মসজিদে নববীতে তাঁর ইন্তেকাল পূর্ব পর্যন্ত ৪৩ বছর যাবৎ বিশ রাকায়াত তারাবী পড়ার কোন বিরোধীতা আয়েশা (রা:) কেন করেন নি ?সুন্নাহ বিরুধী একটি কাজ হযরত আয়েশা (রা:) কখনো মেনে নেবেন এটা কি কল্পনা করা যায় ? তাও মসজিদে নববীতে ? উল্লেখ্য যে, ১৪ হিজরীতে উক্ত নিয়মে ২০ রাকায়াত তারাবী চালু হয়েছে আর আয়েশা (রা:) এর ইন্তেকাল হয়েছে ৫৭ হিজরীতে।

২) একজন সাহাবী থেকে ও কি একথা প্রমাণিত আছে যে, অমুক সাহাবী তারাবী ৮ রাকায়াত পড়েছেন ?রাসূলুল্লাহর (স:) সুন্নাতের অনুসরণের ক্ষেত্রে সাহাবাদের মধ্যে ব্যতিক্রম ইজমা হওয়া সম্পূর্ণরুপে অসম্ভব একটি বিষয়। অথচ তারাবীর বিষয়ে সাহাবায়ে কেরামের ২০ রাকায়াতের উপর ইজমা হয়েছে।

৩) উক্ত হাদিসে ৪ রাকায়াত করে সালাতের উল্লেখ রয়েছে অথচ তারাবী সালাত দুই রাকায়াত করে পড়া হয়।

৪) উক্ত হাদিসে রমযানে এবং রমযান ছাড়া অর্থ্যাৎ সব সময় ৮ রাকায়াত সালাত পড়ার কথা বলা হয়েছে। উক্ত হাদিসটি যদি তারাবী সংক্রান্ত হয় তাহলে তো বাকী ১১ মাস ও প্রতিরাতে ৮ রাকায়াত সালাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা হিসেবে পড়তে হবে। অথচ এরকম কোন বিধান নেই। তারাবীহ শুধু রমযানের সাথে খাস।

অতএব আলোচনার উপসংহারে বলা যায় উক্ত হাদিসটি তাহাজ্জুদ নামায সংক্রান্ত। এটিকে তারাবীর নামাযের দলীল হিসেবে উপস্থাপন করা যৌক্তিকতার পরিপন্থী। তাছাড়া উক্ত হাদিস বর্ণনাকারী হযরত আয়েশা (র:) স্বয়ং অন্য হাদিসে তাহাজ্জুদের সালাত ১৩ রাকায়াত বলে বর্ণনা করেছেন। আরো কিছু সহীহ হাদিসে তাহাজ্জুদ ১৪, ১৬ ও ১৮ রাকায়াতেরও বর্ণনা পাওয়া যায়।
এ ছাড়াও দেখা যায় রাসূল (স:) মাত্র ৩দিন জামায়াতে তারাবীহ আদায় করেছেন বাকী সময় একা একা আদায় করেছেন। সুন্নাহর দাবী হলো মাত্র ৩দিন জামায়াতে তারাবীহ আদায় করা যেহেতু রাসূল (স:) মাত্র ৩দিন জামায়াতে তারাবী আদায় করেছেন বলে সহীহ হাদিসে উল্লেখ আছে। অথচ যারা ৮ রাকায়াত পড়েন তারাও পুরো রমযানই জামায়াতের সাথে ৮ রাকায়াত আদায় করেন। তারা কি একথা প্রমাণ করতে পারবেন যে, রাসূল (স:) পুরো রমযান মাস ভরে জামায়াতে তরাবী আদায় করেছেন ? কার অনুসরণে তাঁরা পুরো রমযান জামায়াতে আদায় করেন ? এটা কি সুন্নাহ বিরোধী নয় ? উমর (রা:) এর জামায়াত প্রবর্তন টা মেনে নিলাম কিন্তু তাঁর রাকায়াত সংখ্যাটাকে সুন্নাহ বিরোধী বিদায়াত আখ্যা দিলাম তা কি করে হয় ?

অথচ খিলাফতে রাশেদার প্রবর্তিত নিয়ম কে ও রাসূলুল্লাহ স্বয়ং সুন্নাহ বলে আখ্যায়িত করেছেন- রাসূল (স:) বলেছেন।
عليكم بسنى وسنة الخلفاء الراشدين المهديين

এ ছাড়াও রাসূল (স:) ইমামের সাথে শেষ পর্যন্ত সালাত আদায় করার ফযিলত বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন-
من قام مع الامام حتى ينصرف كتب له قيام ليلة- )ترمذى صحيح(

অর্থ্যাৎ :ইমামের সাথে শেষ পর্যন্ত তারাবী আদায় কারী সারারাত কিয়ামুল্লাইলের সাওয়াব লাভ করবে। (তিরমিযি)

হযরত ওমর ফারুক (রা:) সম্পর্কে রাসূল (স:) এর বাণী-
উমর (রা:) সম্পর্কে রাসূল (স:) বলেন,

لو كان بعدى نبى لكان عمر . (ترمذى)
অর্থ্যাৎ :যদি আমার পরে কোন নবী হতো তাহলে উমর(রা:) নবী হতো। (তিরমিযি- হাদিস নং ৩৬৮৬)

খিলাফতে রাশেদা এর অনুসরণের প্রতি রাসূল (স:) এর নির্দেশনা রয়েছে। যেমন রাসূল (স:) বলেন-

عليكم بسنتى وسنة الخلفاء الراشدين المهدين تمسكو بها وعضوا عليها بالنواجذ—–ابوداؤد‘ ترمذى‘ احمد.
অর্থ্যাৎ :তোমরা আমার সুন্নাত ও হেদায়াত প্রাপ্ত খলিফাদের সুন্নতের অনুসরণ কর ও তাকে আঁকডিয়ে ধর। (আবু দাউদ, তিরমিযি, আহমদ)

উমর (রা:) এর ইসলাম গ্রহণের জন্য রাসূল (স:) এর দোয়া: একদা রাসূল (স:) দোয়া করেন-
اللهم اعز الاسلام باحب هذين الرجلين إليك بابى جهل او بعمر بن الخطاب: قال وكان احبهما اليه عمر. (ترمذى‘ صحيح )
অর্থ্যাৎ- হে আল্লাহ! আবু জাহল অথবা উমার ইবনুল খাত্তাব, এই দু’জনের মধ্যে যে তোমার কাছে অধিক প্রিয় তার দ্বারা তুমি ইসলাম কে শক্তিশালী কর ও মর্যাদা দান কর। ইবনে উমর (রা:) বলেন, ঐ দু’জনের মধ্যে উমারই আল্লাহর প্রিয় হিসেবে আবির্ভূত হন। (তিরমিযি হাদিস নং-৩৬৮১)

রাসূল (স:) আরো বলেন-
إن الله جعل الحق على لسان عمر وقلبه- )ترمذى(
অর্থ্যাৎ :আল্লাহ তায়ালা উমারের মুখেও অন্তরে সত্যকে স্থাপন করেছেন- (তিরমিযি-৩৬৮২)

মিরাজের রাতে স্বর্ণ নির্মিত বালাখানা দেখলেন উমর (রা:) এর জন্য: এ প্রসংগে রাসূল (স:) নিজেই বলেন-
دخلت الجنة فاذا انا بقصر من ذهب فقلت لمن هذا القصر قالوا لشاب من قريش فظننت أنى انا هو فقلت ومن هو فقالوا عمر بن الخطاب- )ترمذى(
অর্থ্যাৎ :আমি (মিরাজ রজনীতে) জান্নাতে প্রবেশ করলাম। অত:পর সেখানে একখানা স্বর্ণের তৈরি বালাখানা দেখতে পেলাম। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এ বালাখানা কার জন্য ? ফেরেশতারা বললেন, কুরাইশের এক যুবকের জন্য। আমি ভাবলাম আমিই সেই যুবক। আমি বললাম কে সেই যুবক ? ফেরেশতারা বললেন, উমার ইবনুল খাত্তাব (রা:) (তিরমিযি- হাদিস নং ৩৬৮৮)।

উমর (রা:) কে দেখলে শয়তানও ভয় পায়। রাসূল (স:) বলেন,
إن الشيطان ليخاف منك يا عمر- )ترمذى(
হে উমর(রা:) শয়তানও তোমাকে দেখলে ভয় পয়। (তিরমিযি-৩৬৯০)

আমার উম্মতের মুহাদ্দাস উমর ইবনুল খাত্তাব: রাসূল (স:) বলেন-
قد كان يكون فى الامم محدثون فان يك فى امتى احد (يكون) فعمر بن الخطاب. مسلم ,ترمذى
অর্থ্যাৎ :সাবেক উম্মতের মধ্যে মুহাদ্দাস আবির্ভূত হতেন। আমার উম্মতের মধ্যে কেউ মুহাদ্দাস হলে সে হবে উমর।

ইমাম বুখারী (র:) বলেন, যার মুখে স্বত:স্ফুর্তভাবে সত্য ও যথার্থ কথা বের হয় তিনি হলেন মুহাদ্দাস।(মুসলিম-২৩৯৮, তিরমিযি-৩৬৯৩)

রাসূল (স:) এর ঘরে ওমর (রা:) এর আগমন ও স্ত্রীদের একটি ঘটনা :
একবার নবীর স্ত্রীরা তাঁর সাথে উচ্চস্বরে কথা বলছিলেন। উমর (রা:) দরজায় উপস্থিত হলে সাথে সাথে তারা ভয়ে চলে গেলেন।
فدخل عمر ورسول الله صلى الله عليه وسلم يضحك.
উমর (রা:) রাসূল (স:) এর ঘরে প্রবেশ করলেন, রাসূূল (স:) তখন হাসছিলেন।

উমর (রা:) তখন বললেন,
اضحك الله سنك يا رسول الله.

আল্লাহ তায়ালা আপনাকে সদা প্রফুল্লচিত্ত রাখুন হে আল্লাহর রাসূল (স:)! রাসূল (স:) বলেন-
عجبت من هؤلآء اللا تى كن عندى فلما سمعن صوتك إبتدرن الحجاب.
যে সব স্ত্রীলোক এতক্ষণ আমার এখানে বসা ছিল তাদের অবস্থা দেখে আমি বিস্ময়বোধ করেছি। তারা যখনি তোমার গলার আওয়াজ শুনতে পেল অমনি তাড়াতাড়ি পর্দার আড়ালে চলে গেল।

উমর (রা:) বলেন,
فانت احق ان يهبن يا رسول الله ثم قال عمر ياعدوات انفسهن اتهبتنى ولا تهبن رسول الله.
ইয়ারাসূলাল্লাহ! তাদের তো উচিৎ আপনাকে ভয় করা। তারপর উমর (রা:) ঐসব মহিলাকে (নবীর স্ত্রীদের) লক্ষ্য করে বললেন, ওহে স্বীয় জানের দুশমনেরা। তোমরা বুঝি আমাকে ভয় কর আর রাসূলুল্লাহকে ভয় কর না ?

তারা জবাব দিল-
فقلن نعم انت افظ واغلظ من رسول الله صلى الله عليه وسلم.
হ্যাঁ আপনাকে এজন্য ভয় করি যে, আপনি রাসূলুল্লাহর চাইতে অধিকতর রুক্ষ ও কঠোর ভাষী।

তখন রাসূল (স:) বললেন-
إيها يا ابن الخطاب والذى نفسى بيده ما لقيك الشيطان سالكا فجاقط الا سلك فجا غير فجك- )بخارى(
হে ইবনে খাত্তাব ঐ সত্ত্বার কসম। যার হাতে আমার প্রাণ। চলার পথে শয়তান যখন তোমাকে দেখতে পায় তখন সে তোমার রাস্তা ছেড়ে অন্য রাস্তায় চলে যায়। (বুখারী-হাদিস নং-৩৬৮৩)।

আল্লাহর আযাবের ভয়ে ভীত ছিলেন উমর (রা:)
যেদিন উমর (রা:) আহত হলেন মসজিদে নববীতে আবু লুলু কর্তৃক, সে দিন তিনি বলেছিলেন-
والله لو ان لى طلاع الارض ذهبا لافتديت به من عذاب الله عز وجل قبل ان اراه- )بخارى(
অর্থ্যাৎ আল্লাহর কসম! যদি আমার নিকট দুনিয়া ভর্তি সোনা থাকতো তবে আল্লাহর আযাব স্বচক্ষে অবলোকন করার আগেই তা থেকে রক্ষা পাবার জন্য আমি ঐ সব স্বর্ণ বিনিময় হিসেবে দান করে দিতাম। (বুখারী- ৩৬৯২)।

আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহর উপর রহম করুন। সঠিক বুঝ আমাদের দান করুন। দ্বীনের গভীর জ্ঞান অন্নেষণে আমাদের আরও ত্যাগ কুরবানী বৃদ্ধি করার তৌফিক দিন আমিন।
وما علينا الا البلاغ.

লিখেছেন:
মোহাম্মদ কেফায়েত উল্লাহ

Kafait Ullah
অধ্যক্ষ
দারুল ইরফান একাডেমি
চান্দগাঁও, চট্টগ্রাম।
তারিখ- ২১/০৩/২০২৩ ঈসায়ী